কয়লা লোপাট: ছয় সাবেক এমডিসহ ২২ জন কারাগারে

দিনাজপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৩ জানুয়ারি ২০২১ | ০৫:০০ | আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২১ | ০৫:৩৩
দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে কয়লা লোপাটের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় খনির সাবেক ছয় ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) ২২ জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার দুপুরে মামলার চার্জ গঠনের দিন ওই কর্মকর্তারা আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে তাদের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন দিনাজপুর স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মাহমুদুল করিম।
দিনাজপুর আদালতের পুলিশ পরিদর্শক ইসরাইল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ওই আসামিরা জামিনের আবেদন করলে জামিন না মঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০০৬ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের ১৯ জুলাই পর্যন্ত বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৭২৭ দশমিক ৯২ মেট্রিক টন কয়লা চুরি হয়, যার আনুমানিক দাম ২৪৩ কোটি ২৮ লাখ ৮২ হাজার টাকা। এই ঘটনায় তোলপাড় শুরু হলে কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যায়।
কয়লা লোপাটের ঘটনায় বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আনিসুর রহমান বাদী হয়ে ২০১৮ সালের ২৪ জুলাই ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে পার্বতীপুর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলাটি দুদকের তফশীলভুক্ত হওয়ায় দুদক কার্যালয়ে হস্তান্তর করা হয়। পরে মামলাটি দুদকের উপ-পরিচালক সামসুল আলম তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে তদন্ত করেন। ২০১৯ সালের ২৪ জুলাই সাবেক সাত ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) ২৩ জনের বিরুদ্ধে মামলাটির চার্জশিট আদালতে দাখিল করা হয়।
২৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হলেও তাদের মধ্যে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাহবুবুর রহমান মৃত্যুবরণ করেছেন।
চার্জশিটে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ২০০৬ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের ১৯ জুলাই পর্যন্ত (মেয়াদে) ১ লাখ ৪৩ হাজার ৭২৭.৯৯ টন কয়লা আত্মসাতে জড়িত। আসামিরা দন্ডবিধির ৪০৯/১০৯ এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলে তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। এজাহারভুক্তরা ছাড়াও চার্জশিটে ৯ জনকে যুক্ত করা হয় এবং ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা না থাকায় ৫ জনকে আসামির তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার কথা বলা হয়।
আসামিরা হলেন- বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবদুল আজিজ খান, প্রকৌশলী খুরশীদুল হাসান, প্রকৌশলী কামরুজ্জামান, আমিনুজ্জামান, প্রকৌশলী এসএম নুরুল আওরঙ্গজেব ও সাবেক এমডি প্রকৌশলী হাবিব উদ্দিন আহমেদ, সাবেক মহাব্যবস্থাপক (জিএম, প্রশাসন) শরিফুল আলম, আবুল কাসেম প্রধানীয়া, আবু তাহের মো. নুর-উজ-জামান চৌধুরী (মাইন অপারেশন বিভাগ), আরিফুর রহমান মেইন্টেন্যান্স অ্যান্ড অপারেশন বিভাগের ব্যবস্থাপক, নিরাপত্তা বিভাগের ব্যবস্থাপক মাসুদুর রহমান হাওলাদার, নিরাপত্তা বিভাগের ব্যবস্থাপক সৈয়দ ইমাম হাসান, কোল হ্যান্ডলিং ম্যানেজমেন্ট বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মুহাম্মদ খলিলুর রহমান, মেইন্টেন্যান্স অ্যান্ড অপারেশন বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মোর্শেদুজ্জামান, প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) হাবিবুর রহমান, মাইন ডেভেলপমেন্ট বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) জাহেদুর রহমান, ভেন্টিলেশন ম্যানেজমেন্ট বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক ব্যবস্থাপক (ডিজিএম) সত্যেন্দ্র নাথ বর্মণ ও মনিরুজ্জামান, কোল হ্যান্ডলিং ম্যানেজমেন্টের ব্যবস্থাপক শোয়েবুর রহমান, স্টোর ডিপার্টমেন্টের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) একেএম খালেদুল ইসলাম, প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্টের ব্যবস্থাপক অশোক কুমার হালদার ও মাইন প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) জোবায়ের আলী।
- বিষয় :
- দিনাজপুর
- কয়লা লোপাট
- বড়পুকুরিয়া