ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

নির্বিচার পাথর উত্তোলন

১৭ পাথর কোয়ারির ইজারা স্থগিত

১৭ পাথর কোয়ারির ইজারা স্থগিত

পরিবেশগত বিবেচনায় দেশের ৫১টি পাথর কোয়ারির মধ্যে ১৭টি পাথর কোয়ারির ইজারা প্রদান স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ এপ্রিল ২০২৫ | ২৩:০৪ | আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১১:৪১

সিলেটসহ সারাদেশে পাথর কোয়ারিগুলোতে নির্বিচার পাথর উত্তোলনের ফলে প্রকৃতি ও জনজীবন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। উচ্চ আদালতের রায় ও সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী, ২০২০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ সিলেটসহ সারাদেশের গেজেটভুক্ত পাথর কোয়ারি থেকে পাথর, বালু, মাটিসহ সব কোয়ারির ইজারা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর এসব কোয়ারিতে পাথর, বালু ও মাটি উত্তোলন সরকারিভাবে নিষিদ্ধ ছিল। 

দেখা গেছে, অনেকে তখন স্থানীয় প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন অব্যাহত রেখেছিলেন। বিশেষ করে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর টানা এক মাস প্রকাশ্যে সিলেটের পাথর কোয়ারি থেকে পাথর ও বালু লুট করা হয়। গত জানুয়ারি মাসে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সিলেটসহ সারাদেশের গেজেটভুক্ত পাথর কোয়ারিগুলোর ইজারা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত বাতিল করে। পরিবেশবাদীরা এতে অসন্তোষ ব্যক্ত করেন। উদ্বেগ প্রকাশ করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ও। এমন পরিস্থিতিতে  রোববার  পরিবেশগত বিবেচনায় দেশের ৫১টি পাথর কোয়ারির মধ্যে ১৭টি পাথর কোয়ারির ইজারা প্রদান স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

আজ বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের সভাপতিত্বে সারাদেশের গেজেটভুক্ত পাথর কোয়ারি ব্যবস্থাপনা-সংক্রান্ত সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। সভায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

সভায় বলা হয়েছে, আদালতের নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা এবং প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষিত কোনো পাথর কোয়ারিতে ইজারা প্রদান করা যাবে না। এ ছাড়া নৈসর্গিক সৌন্দর্য রক্ষার স্বার্থে সিলেট জেলার ভোলাগঞ্জ, উৎমাছড়া, রতনপুর, বিছনাকান্দি ও লোভাছড়া পাথর মহালে ইজারা কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।

সভায় সিদ্ধান্ত হয়, পাথর কোয়ারিতে ইজারা দেওয়ার আগে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে বাধ্যতামূলকভাবে পরিবেশগত ছাড়পত্র নিতে হবে। অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসনকে পাথর উত্তোলনকারী শ্রমিকদের নয়, প্রকৃত দায়ী ও দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে অবৈধভাবে উত্তোলিত কোনো পাথর বিক্রি না করে, তা কাস্টমসের মাধ্যমে সরকারের নির্মাণকাজে ব্যবহারের জন্য সরবরাহ করা হবে।

পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন শুধু পাথর মহল নয়, অনিয়ন্ত্রিত বালু উত্তোলন রোধেও  একই নীতিমালা অনুসরণ করা যেতে পারে। এতে পরিবেশ ও  জনস্বার্থ রক্ষিত হবে। বালু ও পাথরের মতো প্রাকৃতিক সম্পদগুলো আইন মেনে জনগণের স্বার্থে ব্যবহার করা যাবে।
 

আরও পড়ুন

×